অনেকে জানতে চান বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতি কয়টি – ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধান আইন করে এখানে সংবিধানের মূলনীতি উপস্থাপন করা হয় জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গনতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা এর চার মুলনীতির উপর ভিত্তিকরে রাষ্ট্র পরিচালনা করা হয় যেটা রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি বুঝি।
বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতি কয়টি চারটি, জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গনতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা এই চার নীতি হলো ১৯৭২ সালে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধান আইন । bdlaws.minlaw.gov.bd সাইটে অনুচ্ছেদ অনুচ্ছেদ ভাবে উল্লেখ করা আছে।
বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতি এই চারটি উপাদান হলো ১৯৭২ সংবিধান তবে অনেক সময় এই সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে উপরে উল্লেখ করা ওয়েবসাইটে আপনি বাংলাদেশের সংবিধানের সংস্করণ গুলো দেখে নিতে পারেন।
বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতি কয়টি

বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতি চারটি যথা জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গনতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা এখানে বলা আছে যে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে এই চারনীতি গ্রহণযোগ্যতা পাবে এবং বাংলাদেশের অন্যান্য আইনের কোন ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিতে এই চারনীতি প্রয়োজ আবশ্যক।
জাতীয়তাবাদ
বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ একটি হলো জাতীয়তাবাদ, ভাষাগত ও সংস্কৃতিগত একক সত্তাবৈশিষ্ট যে বাঙালী জাতি এক হয়ে,আন্দোলন সংগ্রাম করে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে সেই সত্তার উপর এই জাতীয়তাবাদ বিদ্যমান। এই নীতি দিয়ে বোঝানো হয়েছে বাঙালীর এই ঐক্য এবং সংহতি হলো বাঙালী জাতীয়তাবাদ
বাংলাদেশের মাটিতে জন্ম নেওয়া প্রতিটা মানুষই বাংলাদেশের সংবিধানের জাতীয়তাবাদ মূলনীতিতে থাকবে, সবাই এক সাথে ঐক্যবধ্য থাকবে তাহলে এই নীতির পুর্ণতা পাবে।
সমাজতন্ত্র
সংবিধানের মূলনীতি চারটি এর মধ্যে সমাজতন্ত্র অন্যতম, সমাজতন্ত্র দ্বারা বোঝায় আমাদের সমাজে যেন একটা মানুষও নিপেড়িত না হয়, যে কোন প্রকার শোষন থেকে মুক্তি দিতে এই সমাজতন্ত্রের গুরুত্ব অনেক।
এই সমাজতন্ত্র নীতি দ্বারা সমাজের উন্নয়ন ও সমাজের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে বাংলাদেশের সকল নাগরিক সমাজতন্ত্রের এই নীতির মধ্যে থাকবে।
আরও পড়ুন – টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম।TIN Certificate Cancelation Rules
গনতন্ত্র
গনতন্ত্র বলতে কোনও জাতিরাষ্ট্রের অথবা কোন সংগঠনের এমন একটা শাসনব্যাবস্থাকে বোঝায় যেখানে নীতিনির্ধারণ বা সরকারি কোন প্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের সমান ভোটাধিকার থাকে। রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য জনগন ভোটের মাধ্যমে এই নীতিনির্ধারক ঠিক করে থাকেন।
এই গনতন্ত্র দ্বারা রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের সমান সুযোগ থাকে, যে কোন আইন প্রস্তাবনা প্রণয়ন ও তৈরির ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের সমান সুযোগ থাকবে।
ধর্মনিরপেক্ষতা
বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতি অন্যতম নীতি হলো ধর্মনিরপেক্ষতা, ধর্ম নিরপেক্ষতা দ্বারা বোঝানো হয়েছে রাষ্ট্রে সকল ধর্মের প্রতি অসাপ্রদায়িক থাকা, আর কোন ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনৈতি করা যাবেনা, এই নীতি দ্বারা বলা আছে যে রাষ্ট্র কখনো কোন ধর্মকে রাজনৈতিক মর্যাদা দিতে পারবেনা।
আবার কোন বিশেষ ধর্ম পালনকারী ব্যাক্তির উপর বৈষম্য বা নিপীড়ন করা যাবেনা আর এইসব গুলো হলো ধর্মনিরপেক্ষতা উপাদান।
বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতি
আরো বেশ কিছু নীতিমালা আছে যেমন মালিকানা নীতি, মৌলিক প্রয়োজনের ব্যবস্থা, গ্রামীণ উন্নয়ন ও কৃষি বিপ্লব, পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র সংরক্ষণ ও উন্নয়ন, অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা, জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা, সুযোগের সমতা।
অধিকার ও কর্তব্য, নাগরিক ও সরকারী কর্মচারীদের কর্তব্য, নির্বাহী বিভাগ হতে বিচার বিভাগে পৃথকীকরণ, জাতীয় সংস্কৃতি, উপজাতি ও ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, জাতীয় স্মৃতিনির্দেশন, আন্তর্জাতিক শান্তি, নিরাপত্তা ও সংহতির উন্নয়ন। এই সব গুলো হলো বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতি বা রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি ।
বাংলাদেশের সংবিধানের মালিকানা নীতি
দেশে কোন কিছুর উৎপাদন, বন্টন ইত্যাদির মালিক হবে জনগণ এর উপর ভিত্তি করে করা হয়েছিলো মালিকানা নীতি, মালিকানা নীতি আবার তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে যেমন রাষ্ট্রিয় মালিকানা, সমবায় ভিত্তিক মালিকানা এবং ব্যাক্তি মালিকানা।
মৌলিক প্রয়োজনের ব্যবস্থা
বাংলাদেশের মানুষের মৌকিল যে বিষয় গুলোর উপর ভিত্তি করে এই নীতি গ্রহন করা হয়েছিলো যেমন , খাদ্য, বস্ত্র, আশ্রয়, শিক্ষা এবং চিকিৎসা, রাষ্ট্রের দায়িত্ব থাকবে বাংলাদেশের মানুষের যেন মৌলিক প্রয়োজনের এই জিনিশ গুলোর সমান সুবিধা পায়।
এছাড়াও কর্মের অধিকার, বিশ্রাম, বিনোদন ছাড়াও অবকাশের অধিকারের কথা বলা হয়েছে, সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার একজন নাগরিক যদি কর্মের জন্য অক্ষম হয়, যেমন হাত,পা না থাকা তাদের জন্য রাষ্ট্র যেমন সরকারি সাহায্যদান করে থাকে।
গ্রামীণ উন্নয়ন
নগর এবং গ্রামের মানুষের মধ্যে জীবন যাত্রার মানের বিশাল এক তফাৎ আছে, আর এই গ্রামীণ উন্নয়ন নীতি দ্বারা নগর এবং গ্রামের মানুষের মধ্যে এক কাতারে আনার চেষ্টা করেছে, যেমন গ্রামের রাস্তাঘাট উন্নয়ন , পরিবহন ব্যবস্থা অথা গ্রামীণ জীবনকে শহরের মানুষের মতো সেবা মুলক এবং অতি দরকারি প্রয়োজন মেটানোর সকল সুবিধা নিশ্চিত করা।
সুযোগের সমতা
বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতি এই বিষয়ে কথা বলার পরে আমাদের বাকি অন্যসব নীতি গুলোর পড়ে রাখা দরকার। আমাদের দেশের সকল নাগরিকের সমান সুযোগ নিশ্চিত করার দায়িত্ব থাকবে রাষ্ট্রের যেন একজন নাগরিকও এটা থেকে বঞ্চিত না হয়।
জাতীয় সংস্কৃতি
এই নীতি আমাদের সকলের মেনে চলা দরকার, বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষনের জন্য ব্যবস্থা গ্রহন করা, জাতীয় ভাষা সাহিত্য এবং শিল্পকলা চর্চা এবং এসব উন্নয়নের ব্যবস্থাগ্রহন করা। দেশের সকল নাগরিক যাতে সহজে এই জাতীয় সংস্কৃতি চর্চা করতে পারে।
বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতি ও আপনাদের প্রশ্ন
আমরা এখানে বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতি এখানে তুলে ধরেছি, আর এই ব্যাপারে আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন, আমরা জানি একটা রাষ্ট্র পরিচালনার চাবি হলো সংবিধান, রাষ্ট্রের কিছু দায়িত্ব থাকবে আবার জনগনেরও রাষ্ট্রের প্রতি দায় দায়িত্ব থাকবে। একটা সুন্দর দেশ গড়ার জন্য সংবিধানের নীতির বিকল্প নেই।
বাংলাদেশের সংবিধানের নাম কি ?
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধান
বাংলাদেশের সংবিধানের প্রস্তাবনা কইয়টি?
বাংলাদেশের সংবিধানের প্রস্তাবনা বা ধারা ১৫৩ টি
বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতি গুলো কি কি?
জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গনতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা
মূলনীতি কি ?
মূলনীতি হলো যে নীতির উপর ভিত্তি করে কাজ করা হয়।